প্রতিদিন ডেস্ক:
জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণে ও গণনায় অনিয়ম, ফলাফলের বিবরণী পত্রে কাটাকাটি, বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে জাল ভোট প্রদান ও নির্বাচনের দিন নৌকার এজেন্টদের মারধর করা ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া সহ নির্বাচন পরবর্তী সময় আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ ও ভোট পুনঃগণনার দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রার্থী ইঞ্জি: মাহবুবুর রহমান হেলাল।
মঙ্গলবার(৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টায় পৌর শহরের শিমলা বাজার এলাকায় মাহবুবুর রহমান হেলাল এর ব্যক্তিগত নির্বাচনী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ লতিফ, বিআরডিবির সাবেক চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন পাঠান, পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে নৌকার প্রার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, রোববার (৭ জানুয়ারি) সকালে নির্বাচন চলাকালীন সময় উপজেলা সাতপোয়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলামের মালিকানাধীন আদ্রা আর এফ কিন্ডারগার্টেন ভাঙচুর করে তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। চরআদ্রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকায় নৌকা সমর্থকদের অন্তত ৫টি বাড়িঘর,দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মোটরসাইকেল সহ আসবাবপত্র ভাঙচুর ও লুট করে এবং নেতাকর্মীদের মারধর করে বাড়ী ছাড়ার হুমকি দেয়া হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বনগ্রাম ও বিলবালিয়া এলাকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম অক্ষর ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক শাহীন সহ নৌকার সমর্থক ৫জনের বাড়িঘর, একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর ও নৌকার সমর্থকদের মারধর করা হয়েছে বলে জানান।
ডোয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক স্বপনের বাড়িতে হামলা। পিংনা ইউনিয়নের বারইপটল এলাকায় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও বেশ কয়েকজনকে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এছাড়াও পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তারের বাড়িতে হামলা।
তাড়িয়াপাড়া গ্রামের নৌকার সমর্থক আনোয়ার হোসেন, জাকির হোসেনের বাড়িঘরে হামলা,
ভাঙচুর ও মারধর করা হয়েছে। নৌকার প্রচার কেন্দ্রের কেয়ারটেকার হামিদুরকে মারধর ও বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। পৌর ৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর নুরুল ইসলাম শেখকে মারধর ও বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। বলারদিয়ার গ্রামের নৌকার এজেন্ট মুমিনুল ইসলাম ও রমজান আলীকে প্রহার। মুমিনুলকে গুরুতর অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্নস্থানে নৌকার সমর্থকদের মোবাইলে প্রাণনাশ ও বাড়ি ছাড়ার হুমকি এবং চাঁদা দাবি করা হচ্ছে।
এরমধ্যে বলারদিয়ার গ্রামের ঢাকাস্থ ব্যবসায়ী ফজলুকে ট্রাক সমর্থিত পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সরিষাবাড়ী অনার্স কলেজের উপাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান মোবাইলে ২১ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে ঢাকা থেকে ধরে এনে হত্যা, বাড়িঘর তছনছ ও ব্যবসা করতে না দেয়ার করার হুমকি এবং অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে (যার অডিও রেকর্ড সংরক্ষণ রয়েছে) বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, বাঙালি জাতির স্বপ্ন দ্রষ্টা ও স্বাধীনতার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যে নেতাকর্মীরা নিজেদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং যে দলের নেতৃত্বে আমরা একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র পেয়েছি।
আজ তাদের ওপর হামলা-নির্যাতন ২০০১ পরবর্তী বিএনপি-জামাতের নৃশংসতারই সাক্ষর বহন করে। যার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী রাজাকার-আলবদর-আলশামসদের স্বরূপ এবং তাদের পারিবারিক তথা পুরনো ঐতিহ্যের চেহারা উন্মোচিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এসময় তিনি আরো বলেন, তাদেরকে দলের নেতা পরিচয় দিয়ে দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা এবং দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনের মাধ্যমে মূলতঃ আওয়ামী লীগকেই বিনষ্ট করার মাস্টারপ্ল্যান ও বিএনপির সাথে তাদের আঁতাতের সুস্পষ্ট লক্ষণ দৃশ্যমান হয়েছে। তাই দলের আদর্শবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত চিহ্নিত নেতাদের দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, আইনগত ব্যবস্থার মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।
এছাড়াও তথ্য গোপন করায় ট্রাক প্রতীকের প্রার্থিতা বাতিল এবং নির্বাচনের পুনঃভোট গ্রহণ/পুনঃগণনার দাবি জানান তিনি।