নাগরিকদের নিরাপত্তা,উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে- টিটু
রিপোর্টারের নাম :
-
আপডেট সময়:
বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪
সময় 10 months আগে
-
১৬২
টাইম ভিউ
দেড়শো বছরের পুরোনো শহর ময়মনসিংহের এমন চেহারা বদলে দেওয়ার রূপকার সদ্য সাবেক মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন,একসময় নাকে-মুখে রুমাল দিয়ে পথ চলতে হতো ময়মনসিংহ শহরে। যেখানে সেখানে পড়ে থাকতো ময়লার স্তুপ। বৃষ্টি হলেই পানিবন্দি হয়ে পড়তো মানুষ। অন্ধকারাচ্ছন্ন শহরে ছিনতাই ছিলো সেই সময়ের নিত্যদিনের ঘটনা। সেইসব চিত্র এখন পুরোপুরি পাল্টে গেছে। সড়কে নেই ময়লা, ভারি বৃষ্টি হলেও কয়েক ঘণ্টায় নেমে যায় পানি। রাতেও আলো ঝলমলে সড়কগুলো।
নাগরিকদের নিরাপত্তা আর নগরের উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করার কথা জানিয়ে ইকরামুল হক টিটু বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে মহাপরিকল্পনা তৈরি করে উন্নয়নের চেষ্টা করেছি। সিটির উন্নয়নে ১৫৭৫ কোটি টাকার মধ্যে মাত্র ৩০০ কোটি টাকার কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
যানজট নিরসন, সড়ক প্রশস্তকরণ, বর্জ্য ব্যস্থাপনা, বাস ট্রাক স্ট্যান্ড নির্মাণ, শিশু পার্ক নির্মাণ ইত্যাদি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরকে আধুনিক এবং জনবান্ধব করে তুলতে নগরবাসী আবারও আমাকে সুযোগ দেবে বলে আমি মনে করি।
কারো মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ভোটারদের উদ্দেশ্যে এ মেয়র প্রার্থী বলেন, নির্বাচনে অনেকেই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বা আশ্বাস দিয়ে বিভ্রান্ত করতে চাইবে, আপনারা কোনো প্রার্থীর মিথ্যা প্রতিশ্রুতিকে বিশ্বাস করবেন না এবং বিভ্রান্ত হবেন না।
তিনি বলেন, শুনেছি একজন প্রার্থী সিটি কর্পোরেশনের এখতিয়ারের বাইরে অসম্ভব কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও আনন্দমোহন কলেজকে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করাসহ ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করে দেবেন বলেছেন, আরেক প্রার্থী প্রচারণা চালিয়ে বলছেন কর ফ্রি করে দেবেন। বাস্তবে এসব কথার কোনো ভিত্তি নেই এবং সম্ভবও নয়।
বিশেষ করে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন। বাসা-বাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহে ক্লিনসিটি নামক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে বর্জ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় প্রিজম ফাউন্ডেশন লি. এর সহযোগিতায় নির্মাণ করা হচ্ছে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট।
এছাড়াও বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্পটিও প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও শহর আলোকিতকরণেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। নগরের বিভিন্ন ওয়ার্ডের প্রায় ১৭১ কিলোমিটার সড়কে স্থাপন করা হয়েছে পোলসহ আধুনিক এলইডি বাতি। তাই রাতের ময়মনসিংহ এখনো আলো ঝলমলে রূপ পেয়েছে। বিগত সময়ে ময়মনসিংহ সিটির উন্নয়নে অভূতপূর্ব কাজ সম্পন্ন করেছেন টিটু।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ইকরামুল হক টিটু আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবারও মেয়র প্রার্থী হয়েছেন। ঘড়ি প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে থাকা এই প্রার্থী একান্ত আলাপচারিতায় বিগত সময়ের নানা কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, করোনার অভিঘাত এবং রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকট সৃষ্টি না হলে নগর উন্নয়নে আরও কাজ করা সম্ভব হতো। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা, মানুষকে নিরাপদে রাখা এবং মানুষের কাছে মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে আমি নিরলসভাবে কাজ করে গেছি।
সকল প্রতিবন্ধকতার মধ্যেও প্রধানমন্ত্রীর বদৌলতে নগরের অনেক কাজ করার চেষ্টা করেছি। যার ২৩ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে বাকি আরও ৭০ ভাগ কাজের চলমান রয়েছে।
স্বাস্থ্যখাতের ব্যাপারে টিটু বলেন, ২০২২ সালে স্থাপন করা হয়েছে একটি নগর মাতৃসদন এবং তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র। এসব কেন্দ্র থেকে মা, শিশুসহ সাধারণ জনগণ কম খরচ বা বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন।
মশক নিধনে হটস্পট চিহ্নিতকরণ এবং নিয়মিত ক্রাশ প্রোগ্রামের ফলে সিটিতে এখনও স্থানীয়ভাবে এডিস মশার কামড়ে আক্রান্ত ডেঙ্গু রোগী পাওয়া যায়নি। তাছাড়া, ভিটামিন এ প্ল্যাস ক্যাম্পেইন, ইপিআই কার্যক্রম, কৃমি নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদিতেও আমরা শতভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছি।
মসিকের প্রথম মেয়র বলেন, আমরা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নেরও চেষ্টা করেছি। ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১১৯২ জনকে বিউটি পার্লার, কম্পিউটার, ড্রাইভিং, মোবাইল সার্ভিসিং ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ, ২৫৭৬ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা বৃত্তি, ১৪৭৬ জনকে পুষ্টি সহায়তা, ৩১২ জন কিশোরীকে স্বাস্থ্য-পুষ্টি পরামর্শ ও পুষ্টি উপকরণ প্রদান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য নলকূপ, রোড লাইট, ড্রেন, টয়লেট, সেপটিক ট্যাংক ইত্যাদি নির্মাণের মাধ্যমে সহযোগিতা প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ছড়িয়ে দিতে শম্ভুগঞ্জ ব্রিজের কাছে স্থাপন করেছেন জয়বাংলা চত্ত্বর। এটি মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর স্মরণে এক অনন্য স্থাপত্যে পরিণত হয়েছে। এছাড়া, টাউনহলে স্থাপন করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু গ্যালারি। এখানেও প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী বঙ্গবন্ধুর দুর্লভ ছবি, ডকুমেন্টারি, বাণী ইত্যাদি দেখার সুযোগ পাচ্ছেন।
টিটু বলেন, সিটি কর্পোরেশন একটি নিদিষ্ট বিধিমালা ও আইন অনুযায়ী চলে। এছাড়া রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে একটি সুনির্দিষ্ট পরিপত্র অনুসরণ করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিটির উন্নয়নে যেসব প্রকল্প বরাদ্দ দিয়েছেন এসব প্রকল্প দৃশ্যমান হলে নগরীর চেহারা পাল্টে যাবে।
আধুনিক ময়মনসিংহ নগরী বিনির্মাণের স্বপ্ন নিয়ে বিগত এক যুগ ধরে নিরন্তর নগরবাসীর সেবায় কাজ করে গিয়েছি। প্রস্তাবিত, প্রক্রিয়াধীন ও চলমান সকল উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন হলে নগরবাসী পাবে তাদের প্রত্যাশিত স্মার্ট নগর।
এজন্য অসমাপ্ত ও প্রক্রিয়াধীন কাজগুলো বাস্তবায়ন করতে সমৃদ্ধ আধুনিক ময়মনসিংহ নগরী গড়তে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
জান্নাতুল ফেরদৌস/এসএম
আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন
এই বিভাগের আরো খবর