প্রতিদিন ডেস্ক :
নির্বাচন এলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উৎসবের আবহ সৃষ্টি হয়। চায়ের দোকান, ক্যাম্পাসের অলি-গলি বা মোড়ে মোড়ে নির্বাচন ইস্যুতে সবাই মেতে থাকে।
আগে দেখতাম নেতারা অনেকে এমপি প্রার্থীদের জন্য মিছিল নিয়ে যান। কিন্তু গত দুটি জাতীয় নির্বাচনে এমন কিছু লক্ষ্য করা যায়নি। এবারও একই অবস্থা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর বক্তব্য এটি। বিএনপিসহ রাজপথের বিরোধীদের একটা বড় অংশ নির্বাচনে না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস একরকম ‘নীরব’ হয়ে আছে বলে মনে করছেন তার মতো অনেক শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং বয়োজ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন মানে চারদিকে এটা উৎসব উৎসব ভাব ছিল আগে।
ঈদ ও পূজার মতো জাতীয় নির্বাচনও উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করত। তবে, এবার ভোট উৎসবে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। অনেকেরই ভোটের ব্যাপারে তেমন আগ্রহ নেই।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বেশ কয়েকটি জায়গায় আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বাহাউদ্দীন নাছিমের পোস্টার টানানো রয়েছে। তবে বিরোধী দলের তেমন কোনো প্রচারণা কিংবা ব্যানার না থাকায়… বিরোধী দলে কে বা কারা আছেন, তা জানেনই না অধিকাংশ শিক্ষার্থী।
তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী সোনালি আঁশ প্রতীকধারী এ ইউসুফ একদিন মাইকিং করলেও তার দল বা তাকে চেনেন না কোনো শিক্ষার্থী।
নৌকা প্রতীকের একটি প্রচারণা স্টলের পাশেই বর্ধিত আরেকটি প্রচারণা স্টল বসাতে দেখা গেছে। যদিও স্টলগুলোতে নেতাকর্মীদের আনাগোনা কম।
ঢাবি এলাকা ঢাকা-৮ আসনের অন্তর্ভুক্ত। এই আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ১৪ দলীয় জোটের নেতা ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তবে, এবার জোট থেকে তাকে মনোনয়ন না দিয়ে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমকে মনোনয়ন দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন বলেন, নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে গেলে যে আনন্দের উপাদান থাকতে হয়, তা গত দুই নির্বাচনে দেখা যায়নি।
এবারের নির্বাচনেও এর পুনরাবৃত্তি হতে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি যে, সাধারণ জনগণের নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও ভোট দেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকে এমন একটা অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে… যেখানে আওয়ামী লীগ ব্যাতীত কারও আনন্দের ছিটেফোঁটাও নেই।
ঢাবি শাখা ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার তার অবৈধ ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখতে নির্বাচনকে নির্বাসনে পাঠিয়ে ক্ষমতার লালসা মিটাচ্ছে। এখানে মানুষের ভোটের অধিকার সম্পূর্ণ হরণ করা হয়েছে।
মানুষ সবশেষ ভোট দিতে পেরেছে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস তার ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের মানুষ ও শিক্ষার্থীরা হাসিনার এই তামাশার নির্বাচনকে বর্জন করেছে। যেখানে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নেই, সেখানে উৎসব বা আমেজের তো কোনো সুযোগই নেই।