ময়মনসিংহ বিভাগীয় ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ হোন শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার ( ৭জুন) বিকেল গণতন্ত্র মঞ্চ ময়মনসিংহের আয়োজনে নগরের মুসলিম ইনস্টিটিউট হল রুমে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ভাসানী অনুসারী পরিষদের ময়মনসিংহ জেলা শাখার সভাপতি মাহবুবে আলম জুয়েলের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুম, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য মীর মোফাজ্জল হোসেন মোস্তাক।
এতে নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), বাংলাদেশ বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, ভাসানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন এ ছয়টি দলের নেতারা অংশ।
নিজের বক্তব্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই দেশে যে অনাচার চলছে তা আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগকেও হার মানিয়েছে। মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার নিয়ে গণভোগান্তির কেমন ভোগান্তি হয়েছে তা আপনারা জানেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বললেন, বেনজীর-আজিজ তাদের দলের কেউ না। কিন্তু দেশের সবাই জানে, সারা পৃথিবীই জানে, এদের গডফাদার কারা। এই সরকার দেশ চালাতে পারবে না। বিভিন্ন দেশের কাছে সরকার ১০০ বিলিয়ন ডলার ঋণগ্রস্ত। টাকা ফেরত চেয়ে দেশ গুলো চাপ দিচ্ছে, কিন্তু সরকারের কাছে টাকা নেই।
তিনি আরও বলেন, নতুন বাজাটে মানুষের কোনো পরিবর্তন হবে না। আড়াইল লক্ষ্য কোটি টাকা উন্নয়ন বাজেট রাখা হয়েছে, কিন্তু সরকারের হাতে কোনো টাকা নেই। প্রত্যেক বছর আগের বছরের বাজেটের সঙ্গে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়। কিন্তু এবার মাত্র ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে কারণ সরকারের কাছে টাকা নেই।
আলোচিত সেনা প্রধান আজিজ ও পুলিশ প্রধান বেনজির, ভারতে বাংলাদেশি এমপি খুন হওয়া নিয়েও তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার হচ্ছে চোর, ডাকাত, লুটেরা ও ধর্ষক তৈরি করবার দল।
এদের লজ্জাও করে না। মান্না বলেন, তথাকথিত নির্বাচন আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করেনি বরং আরও দুর্বল করেছে। আমরা যা বলেছি তাই সত্যি হয়েছে। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়, একটি অন্তবর্তী সরকার হতে হবে, এবং সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
বিগত নির্বাচনে আমাদের ডাকে মানুষ ভোট বর্জন করেছে এটি আমাদের বিজয়। তিনি আরও বলেন, আমরা চূড়ান্ত লড়াই পর্যন্ত আছি। আমরা একটি কল্যাণ রাষ্ট্র করতে চাই। সংবিধান পরিবর্তন হবে, আইন পাল্টানো হবে, মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে।
এই দুঃস্বাশনকে ঘাড় থেকে নামাতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করতে হবে। আমরা এই দেশ, জনগণের ভাগ্য, অর্থনীতি সব বদলে দেব।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন,গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আজিজকে সেনাপ্রধান বানিয়েছে,বেনজীরকে র্যাবের মহাপরিচালক ও আইজিপি বানিয়েছে।
আজিজ-বেনজীরকে দিয়ে ক্ষমতা দখল করেছেন আর এখন বলছে ওরা আমাদের লোক না। সরকারকে বলি, জনগণের ভোট ছাড়া ক্ষমতায় আছেন বলে সবাইকে বোকা ভাববেন না। এসব ধান্দা বাদ দিয়ে পদত্যাগ করেন। অর্থনীতি ধ্বংস করেছেন।
সামনে আরও খারাপ সময় আসছে। কিন্তু এ দফায় টিকতে পারবেন না। ত্রিশ লাখ টাকা বেশি আয় করলে পুরো টাকার ৩০ শতাংশ এবং তার উপর ১৫ শতাংশ সারচার্জ দিতে হবে। আর কালোটাক সাদা করলেও ১৫ শতাংশ কর দিয়ে বৈধ হয়ে যাবে।
এটি একটি বেনজির বাজেট। এটি বেনজির ও আজিজদের বাজেট সেটি তারা (সরকার) প্রমাণ করেছে। এই বাজেট সমস্ত সম্পদ লুণ্ঠণকারীদের রক্ষা করার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১৩ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
সরকার ঠিকঠাক মতো পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে দিতে পারছে না। ছোট-মাঝারি শিল্পগুলো চাপের মধ্যে পড়ছে।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার হচ্ছে শ্রমিক, মজুর মেহনতি মানুষের রক্ত শুষে নেওয়ার সরকার। মানুষের ভোট কেড়ে নেওয়ার সরকার। নাগরিকদের নিরাপত্তা ও পুরো দেশের নিরাপত্তা কোথায় তা উপলব্ধি করতে হবে।
এই সরকার কাদের সরকার তা পরিস্কার হয়ে গেছে। ভারতের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই সরকার। তাই প্রতিটি থানায় ইউনিয়নে গণতন্ত্র মঞ্চ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, মঞ্চের ছয়টি দলের প্রত্যেকটিকে সংগঠিত করুন।
নিজেদের মধ্যে দৃঢ় ঐক্য গড়ে তুলুন। কারণ মঞ্চ এবার তুমুল লড়াই শুরু করেছে। মঞ্চ এবার বলেছে, এই শাসকরা ৫৩ বছর ধরে যে অবস্থায় পরিচালনা করছে তাতে রাষ্ট্র এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান বিপর্যস্ত।